মাসুদ হোসেন খান, মাদারীপুর
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের ফাঁসাতে মানসিক প্রতিবন্ধী এক যুবককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।বুধবার (৩ জানুয়ারী) রাতে উপজেলার সিডিখান ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত আনোয়ার আলী ফকিরের ছেলে রাজ্জাক ফকির (৩৮)কে হত্যাচেষ্টার এ ঘটনা ঘটে।উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারী) বিকেলে উপজেলার মোক্তার হাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীর আত্মীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে সিডিখান ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মকবুল বেপারীর ছেলে রাসেল বেপারী ওরফে পিচ্চি রাসেল মানসিক প্রতিবন্ধী রাজ্জাককে তার আস্তানায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে অমানসিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে মুখে ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায় রাসেল। প্রতিবেশীরা ঘটনাটি টের পেয়ে দ্রুত স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি লোকজন নিয়ে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজ্জাককে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। তবে লোকজন চলে আসার পরপরই রাসেল কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখান থেকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। মূলত রাসেলের ঐ আস্তানাটি মাদকসেবন ও টর্চারসেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে ধারনা করছে এলাকাবাসী।
সিডিখান ইউপি চেয়ারম্যান চানমিয়া শিকদার জানান, “রাজ্জাক ফকির একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। সে এলাকার সবার কাছে চেয়ে চেয়ে খেত। গতরাতে আমার বাড়ির ৬০-৭০ ফিট পিছনে নিয়ে রাজ্জাককে হত্যাচেষ্টা সম্পূর্ন ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। মূলত সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাকে এবং আমার সাথের নৌকার সমর্থকদের ফাঁসাতে এ পরিকল্পনা করা হয়। রাজ্জাককে হত্যাচেষ্টাকারী রাসেল স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের ঈগল প্রতীকের একজন সমর্থক। রাজ্জাককে মেরে তার লাশ আমার বাড়ির কাছে ফেলে রেখে আমাদের ফাঁসিয়ে নির্বাচনে এই এলাকার নৌকার সমর্থকদের সরিয়ে মাঠ খালি করতে চেয়েছিল প্রতিপক্ষ। আমরা প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।”
হামলার শিকার রাজ্জাকের চাচাতো ভাই মোঃ সিরাজুল হক বলেন, “সংসদ নির্বাচনে আমরা নৌকার সমর্থন করি। আমার চাচাতো ভাই রাজ্জাককে মেরে নৌকার সমর্থকদের ফাঁসাতে চেয়েছিল প্রতিপক্ষের লোকজন। আমরা এ নেক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই যাতে আর কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।”এ ঘটনায় হামলার শিকার রাজ্জাকের বোন রেখা বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।