ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ৩৮ বছর ধরে পিঁড়িতে বসে চুল কাটার কাজ করেছেন ৬২ বয়সী দীনেশ শর্মা।
দিনেশ শর্মা বলেন, ৩৮ বছর আগে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের হলদিবাড়ী বাজারে স্থায়ী কোনো দোকান ছিল না। সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শুক্রবার এ দুদিন কয়েকজন ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে জিনিসপত্র বিক্রি করত। তখন থেকে পিঁড়িতে বসে চুল ও দাঁড়ি কাটার কাজ করছি।
তখন চুল কাটার দর ছিল ১০ পয়সা এবং দাঁড়ি কাটার দর ছিল ৫ পয়সা। এখন চুল কাটার দর ৩০ টাকা এবং দাঁড়ি কাটার দর ২০ টাকা। এখন প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। তিনি আরও বলেন, ৩৮ বছর চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো বাজারের চিত্র বদলে গেলেও আমি এখনো বদলাইনি। একইভাবে সেই আগের মতই কাজ করে যাচ্ছি। দিনেশ শর্মা বলেন, গেল ৮ বছর ধরে বাজারটি বড় হয়েছে। এখন সপ্তাহে দুদিন নয়, বরং ৭ দিনই বিকেল ৩ টার পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। এ ভিড় থাকে রাত ৯-১০টা পর্যন্ত।
যদিও আমি অন্ধকার হলেই বন্ধ করে দিই চুল ও দাঁড়ি কাটার কাজ। দিনেশ শর্মার দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। তিন ছেলেই নরসুন্দর পেশায় রয়েছেন। তবে তারা মাটিতে নয়, সেলুনে কাজ করেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেলুনে চুল কাটার কাজ করার ইচ্ছা আছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে দিনেশ শর্মা বলেন, পিঁড়িতে বসে কাজ করে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এখন চাইলেও আর সম্ভব নয়।
জীবনের বাকি দিনগুলো এভাবেই কাজ করতে চাই। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নরসুন্দর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মগেন শর্মা জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রায় ৪০ জনের মতো বয়স্ক নরসুন্দর পিঁড়িতে বসে চুল ও দাঁড়ি কাটেন। যারা অল্প টাকায় চুল ও দাঁড়ি কাটেন।”