অবিশ্বাস্য এক ঘটনা! পতিত সরকারের ১জন সংসদ সদস্য হত্যা মামলায় কারাগারে থেকেও নির্বিগ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের টেন্ডার বাণিজ্য। এ কাজে তাকে টাকার বিনিময়ে সহযোগীতা করে যাচ্ছে কিছু উঠতি মস্তান আর একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা।
আর এ প্রকৃয়ার মাধ্যমে এখনও প্রতি মাসে লুটপাট হয়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা, অপরদিকে প্রতিবছর এম এস আর টেন্ডারের মাধ্যমে ৫ কোটি টাকার মালামাল ক্রয় দেখালেও অর্ধেকটাই লোপাট হয়ে যাচ্ছে।
বিগত পতিত সরকারের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা রাণীকে ভাড়াটিয়া ঠিকাদার লিমন কন্সট্রাকশন, বগুড়ার নামে ২০২১-২২ অর্থ বছরে খাদ্য সরবরাহের কাজটি নিয়ে দিয়েছিলেন। কার্যাদেশ প্রদান করা হয়, ১২জুন’২০২২ তারিখে । সেই টেন্ডার অদ্যাবধী চলমান আছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ঠিকাদারগণ হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি প্রতিবারই জবাব দেন “নতুন টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে। এরপর ২৪ এপ্রিল ২০২৪ খৃঃ তারিখে পথ্য টেন্ডার আহবান করা হয়। উক্ত টেন্ডারে বেশকিছু ঠিকাদার প্রতিযোগীতামূলক দর দিয়ে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে সেই টেন্ডার এখনও আলোর মুখ দেখেনি, ফলে সাবেক সংসদ সদস্য রসেশ সেনের দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা রাণির লোকজনই সরবরাহের কাজটি চালিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সাংসদ রমেশ সেন কারাগারে গেলেও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা রাণী পরিবারের সকল সদস্য সহ পালিয়ে যান এবং এখনও পলাতকই আছেন। মুক্তা রাণী পলাতক থাকলেও তার ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পথ্য সরবরাহের কাজের কোন বিগ্ন ঘটছে না।
এ কাজে তাকে সহযোগীতা করছে স্থনীয় কিছু উঠতি মস্তান এবং একটি রাজনৈতিক দলের কিছু সদস্য। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ সেন আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন টেবিলে নিজের লোকজন বসিয়ে রেখেছিলেন।
সে সকল লোকজনের অধিকাংশই এখনও বহাল তবিয়তে রমেশ সেনের স্বার্থ সংশ্রিষ্ট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই কর্মীদের মধ্যে অন্যতম হলো রমেশ সেনের ভাতিজা জয়ন্ত সেন (হিসাব রক্ষক)। হাসপাতালের যতগুলো আয়ের খাত আছে তার নিয়ন্ত্রন জয়ন্ত সেনের হাতে। জানা গেছে , এই আয়ের সিংহ ভাগই লুটপাট হয়, জয়ন্তর নেতৃত্বে। ইতোপূর্বে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত প্রমাণ হওয়ায় তাকে অন্যত্র বদলী করা হলেও রমেশ সেন তাকে ফিরিয়ে এনে পুনর্বহাল করে।
একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরেও তার সেই দলের সংসদ সদস্যের রেখে যাওয়া লোকজন কীভাবে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অনিয়ম আর দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে তা সচেতন মহলের বোধগম্যের বাইরে।
তারা মনে করেন সরবরাহ এবং এম এস আর টেন্ডারের নামে যে লুটপাট চলছে তা রোধ করতে অবিলম্বে স্বচ্ছভাবে নতুন টেন্ডার করতে হবে এবং অপকর্মের হোতা জয়ন্ত সহ অন্যদের ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে অনত্র বদলী করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।