রংপুরের মিঠাপুকুরের রাণীপুকুর ইউনিয়নের আজিতপাড়া গ্রামে জমিজমার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ জমশেদ আলী মিঠাপুকুর থানায় বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করার পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে মিঠাপুকুর থানার ওসির বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের আজিতপাড়া গ্রামে জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১ টার সময় মাহাবুল ইসলাম, মোঃ এনামুল হক,মোঃ নূর আমিন, মোঃ বাবু মিয়া, মোছাঃ অরেচা বেগম,মোছাঃ তানিয়া বেগম, মোছাঃ আশা মনি এর নেতৃত্বে লাঠি-সোটা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে মোঃ জমশেদ আলী, আবু সাইদ, মোঃ জাহিদ মিয়া,মোতালেব,কুলসুমাসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এঘটনায় ১০ ডিসেম্বর রাতেই জমশেদ আলী বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে পরেরদিন মিঠাপুকুর থানার এসআই মঞ্জুরুল তদন্ত করে ঘটনার সত্যটা নিশ্চিত করে জানান এবিষয়ে মামলা হবে। কিন্তু স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি নেতাদের হস্তক্ষেপে বাদীর নামে পাল্টা এজাহার দিয়ে মীমাংসায় বাধ্য করাতে হুমকি দেয়া হচ্ছে ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক তদন্তের নামে রহস্যজনকভাবে মামলা নিতে সময়ক্ষেপণ করছেন। অন্যদিকে বিবাদীর ক্রমাগত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বাদী জমশেদ।
এবিষয়ে জমশেদ আলী জানান, আমার ফুফু ওয়ারেছা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করার পর মানবিক দিক বিবেচনায় আব্বু তাকে নিজের জমিতে থাকার জায়গা দিয়েছিলো। এখন ফুফু আর তার ছেলেমেয়েরা আমাদের জমিজমা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ২/৩ মাস পূর্বে কবরস্থানে লাগানো গাছ ভাংচুর করেছিলো তার বসতভিটায় ছায়া হয় এই অজুহাত তুলে। এখন আবার ছোরা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে হাড় ভেঙ্গে আমাদের সবাইকে আহত করার পরেও তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াইতেছে।অথচ ওসি এক জাতীয় পার্টির নেতার কথা শুনিয়া মামলা রেকর্ড করতেছে নাহ।সে জাতীয় পার্টির নেতা আমার কাছে টাকা চাইছে।কইছে টাকা হইলে মামলা রেকর্ড হইবে।আসামিও ধরা হইবে।আমি ন্যায় বিচার চাই।
এবিষয়ে কথা বলতে বিবাদী মাহাবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
মিঠাপুকুর থানার এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার তদন্ত করে সত্যটা নিশ্চিত হয়েছি। বাদী বিবাদী দুইজনেই রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় হওয়ায় ওসি স্যার দুইদিন সময় দিয়েছেন মীমাংসার জন্য।অন্যথায় মামলা হবে। বাদী জমশেদ আলীর পরিবারের চারজন আহত হয়েছে ও বিবাদীপক্ষের একজন আহত হওয়ায় বিবাদীপক্ষ পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেছে থানায়। এবিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। ২/৩ মাস পূর্বের একটি ঘটনার জেরে বিবাদীরা বাদী জমশেদ আলীর উপর হামলা চালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তদন্তে জানতে পেরেছি।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এবিষয়ে এটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নেয়ার মতো বিষয় হলে অবশ্যই মামলা নেয়া হবে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথোপকথোনের একটি কলরেকর্ডে জানা যায়,এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি মীমাংসার জন্য সময় নেয়ায় এই মামলাটি রেকর্ড করা হচ্ছে নাহ।