রংপুরের বদরগঞ্জে চিহিৃত দাদন ব্যবসায়ীদের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করণসহ দাদন ব্যবসায়ীদের আগ্রাসন থেকে পরিত্রান চেয়ে মানববন্ধন করেছেন সর্বস্বান্ত হওয়া নিষ্পেষিত এলাকাবাসী।
৭ডিসেম্বর(শনিবার)বেলা ১২টায় উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রামনাথপুর বটতলী বাজারে ভুক্তভোগীদের ব্যানারে ওই মানববন্ধনে অংশ নেয় শত-শত নারী-পুরুষ।
মানববন্ধনে হয়রানির শিকার ব্যক্তিরা বলেন,এই এলাকার দাদন ব্যবসা খ্যাত চৌরির বিল(গুচ্ছ গ্রামের)আব্দুর রাজ্জাক ও মনুজা বেগমের নেতৃত্বে মমিনা, মুক্তা,সাগিরা,মোস্তারিনা,মনজিরা ও মমেজা বেগম সহ এক ডজন দাদন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে এলাকার অভাবগ্রস্থ মানুষকে ফুসলিয়ে তাদেরকে চড়া সুদের উপর ঋণ প্রদান করে আসছে।
তারা গ্রামের অর্থাভাব লোকজনের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে এই দাদন ব্যবসার মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ-লক্ষ টাকা। তারা এই অবৈধ ব্যবসা করে বর্তমানে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন যা কিনা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ণ ব্যাংক বদরগঞ্জের ট্যাক্সেরহাট শাখায় তাদের ব্যাংক একাউন্ড তলব করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।ওই ব্যাংকে প্রত্যেক দাদন ব্যবসায়ীর একাউন্টে রয়েছে লক্ষ-লক্ষ টাকা।অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযোগ করেও ফল পাওয়া যায়না।উল্টো সংঘবদ্ধ দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারায় অভিযোগকারীদের পথে-ঘাটে লাঞ্চিত হতে হয়।
এবিষয়ে মানবন্ধনের আয়োজনকারী দক্ষিণ রামনাথপুর গ্রামের ভুক্তভোগী গোলাপ চন্দ্র, স্বপন কুমার,রতন কুমার,নারায়ন চন্দ্র,লিটন চন্দ্র,শ্রীমতি মেনোকাবালা,স্মৃতি রানী,বাচ্ছানী রানী ও অনিতা রানী অভিযোগ করে বলেন,রামনাথপুর ইউনিয়নের চৌরির বিল আবাসন প্রকল্পে এক ডজন দাদন ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীদের দলনেতা।তারা স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে অনায়াসে এই অবৈধভাবে দাদন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।তারা সকলে সরকারী বস্তিতে (গুচ্ছ গ্রাম)বসবাস করলেও দাদন ব্যবসায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছে। ব্যাংকের ফাঁকা চেক,জমির দলিল ও ফাঁকা স্ট্যাম্প হলেই তাদের কাছে যে কোন পরিমান ঋণ পাওয়া যায়। ঋণ গ্রহণের পর থেকে প্রতি হাজারে সপ্তাহে ২শত টাকা করে সুদ দিতে হয়।কোন সপ্তাহে সুদের টাকা দিতে না পারলে পরবর্তীতে চক্রবৃদ্ধি হারে তাকে সুদ দিতে হবে।তারা রাতের বেলা আমাদের বাড়ীতে লোকজন নিয়ে এসে আমাদের কাছ থেকে জোর করে সুদের টাকা আদায় করে থাকে।কেউ সাপ্তাহিক সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে প্রকাশ্যে মারডাংসহ নানা রকম হয়রানী করা হয়।ওই সব দাদন ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে আমাদের প্রতিবেশী বিবিদাস,অনুকুল চন্দ্র ও ধনেশ্বর চন্দ্রসহ ১৪-১৫টি পরিবার সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।আমরা এই এলাকার শতাধিক সংখ্যালঘু ভুক্তভোগী দাদন ব্যবসায়ীদের সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আজ সর্বস্বান্ত হয়েছি।সেইসাথে তাদের বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে গণ-স্বাক্ষর সম্বলিত লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি।তারপরেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এই সব চিহিৃত দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে তারা আমাদের অস্তিত্ব বিলিন করে ছাড়বে।
বদরগঞ্জ থানার ওসি একেএম আনিসুর রহমান জানান,বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জান বলেন,তদন্ত পুর্বক বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।